"তুইই আমার সব"

নিলু মাত্র ১৪ বছরের কিশোরী, আর তার ছোট ভাই তুহিন তখন মাত্র ৩ বছরের। হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় তাদের মা-বাবা একসাথে মারা যান। আত্মীয়স্বজন অনেকে সহানুভূতি দেখালেও কেউ তাদের নিজের কাছে রাখতে চায়নি। তখন নিলুই হয়ে ওঠে তুহিনের মা, বাবা, বোন—সব কিছু।

ছোট বয়সে নিলু নিজে ঠিকমতো খেত না, কিন্তু তুহিনকে ঠিকমতো খাওয়াত। পাশের বাড়ির কাজ করত, কখনো কারো বাসায় কাপড় কাচত, আবার বিকেলে দুই-তিনটা বাচ্চাকে পড়াত। কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতেনি, শুধু একটাই লক্ষ্য—"আমার ভাই যেন মানুষের মতো মানুষ হয়।"

তুহিন কিছু না বুঝলেও, বড় হওয়ার পর দেখল—তার বন্ধুরা যখন স্কুলে যাচ্ছিল, তখন তার বোন একজোড়া পুরোনো স্যান্ডেল পরে কাজ করে তার খরচ জোগাচ্ছে। সে বোনকে বলত, “তুই কেন এত কষ্ট করিস?”

নিলু হেসে বলত, “তোকে মানুষ করতে পারলে আমার কষ্ট কোথায়?”

দিন যায়। তুহিন ভালো ফল করে কলেজে ভর্তি হয়, পরে সরকারি চাকরিও পায়। প্রথম মাসের বেতন হাতে পেয়েই ছুটে আসে বোনের কাছে। নিলুর হাত চেপে ধরে বলে,
"তুই মা না হলে, আমি কিছুই হতে পারতাম না। তুই শুধু বোন না, তুইই আমার জীবন।"

নিলু চোখের পানি লুকিয়ে শুধু বলে,
"তুই হাসলে, আমার সব কষ্ট ভুলে যাই রে ভাই।"

Comments