"ছায়ার মতো বাবা"
রিফাত ছোটবেলায় বাবাকে খুব একটা বুঝত না। আবু তাহের একজন রিকশাচালক। দিনের পর দিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ক্লান্ত শরীর নিয়ে রাতে বাড়ি ফিরতেন। মুখে কখনো ক্লান্তির ছাপ রাখতেন না। রিফাত ভেবেই নিত, "বাবা তো কেবল রিকশা চালান, কোনো গর্ব করার মতো কিছু না।"
মা সবসময় বলতেন, "তোর বাবা না থাকলে আমরা এতটুকু নই রে। উনি আমাদের জন্য বাঁচেন।"
রিফাত তখন বোঝেনি।
বাবা কখনো ভালোবাসা মুখে বলতেন না। কিন্তু শীতে নিজের চাদর দিয়ে রিফাতকে মুড়িয়ে দিতেন, রাতে বাড়ি ফিরেই ছেলের জুতোর ফিতে বেঁধে দিতেন, স্কুলে যাবার আগে ছেলের ব্যাগ নিজ হাতে গুছিয়ে দিতেন।
রিফাত বড় হতে থাকে। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বাবার চোখে জল, কিন্তু মুখে শক্ত হাসি—“তুই অনেক বড় হবি রে। আমার জীবনে যা হয়নি, তুই সেটা করবি।”
দিন যায়। রিফাত এখন একজন ইঞ্জিনিয়ার। প্রথম বেতন পেয়ে বাবার হাতে একটি চেক তুলে দেয়। আবু তাহের চোখ নামিয়ে বলেন, “তুই তো আমার অহংকার। আমি তো ছায়া, তুইই আলো।”
রিফাত বাবার পায়ের কাছে বসে বলে,
“ছায়া না থাকলে আলো জ্বলে না, বাবা। আজ আমি যেটুকু হয়েছি, সব তোমার মাথার ঘাম আর ভালোবাসার জন্য।”
Comments
Post a Comment